ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর দুই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এই যুদ্ধে শুরু থেকেই রাশিয়াকে সমর্থন দিয়ে আসছে প্রতিবেশী বেলারুশ। এবার নিজেদের যুদ্ধের প্রস্তুতি পরখ করে দেখতে বুধবার দেশটির সামরিক বাহিনী বৃহৎ পরিসরে মহড়া শুরু করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরুর আগেও বেলারুশের সঙ্গে যৌথ মহড়া চালিয়েছিল রাশিয়া। যে কারণে বেলারুশ ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
রাশিয়ার যুদ্ধে বেলারুশের সশস্ত্র বাহিনী যোগ দিলে তা মোকাবিলায় কিয়েভ প্রস্তত বলে জানিয়েছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন। বুধবার দেশটির আন্তঃসীমান্ত পরিষেবা বিভাগের একজন মুখপাত্র এই ঘোষণা দিয়েছেন।
রাশিয়ার অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ। যুদ্ধের প্রস্তুতি যাচাইয়ের জন্য বুধবার দেশটির সামরিক বাহিনী বৃহৎ পরিসরের মহড়া শুরু করেছে। তবে এই মহড়া প্রতিবেশীদের জন্য কোনও হুমকি তৈরি করবে না বলে জানিয়েছে দেশটি।
ইউক্রেনের স্টেট বর্ডার সার্ভিসের মুখপাত্র আন্দ্রি দেমচেঙ্কো বলেছেন, ‘আমরা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কিছু ক্ষেত্রে রাশিয়ান ফেডারেশনের বেলারুশের ভূখণ্ড, বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহারের সম্ভাবনা নাকচ করছি না।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে সীমান্তে ব্যাপক সেনা-সম্ভার জড়ো করে শক্তি বৃদ্ধি করেছে বেলারুশ। তিনি বলেন, ‘তাই আমরা প্রস্তুত।’
ফেব্রুয়ারিতে বেলারুশের সঙ্গে সামরিক মহড়ার পরপরই ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করেছিল রাশিয়া। সেই মহড়ার মাধ্যমে বেলারুশ-লাগোয়া ইউক্রেনের সীমান্তের একেবারে কাছে পৌঁছেছিল রুশ সামরিক বাহিনী।
আগ্রাসনের একেবারে শুরুর পর্যায়ে বেলারুশ সংলগ্ন ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডগুলো রুশ হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়। তবে বর্তমানে রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার দিকে মনোনিবেশ করে হামলা বৃদ্ধি করেছে।
দেমচেঙ্কো বলেন, রাশিয়া-সমর্থিত ট্রান্সনিয়েস্ত্রিয়া অঞ্চলের সাথে সীমান্ত এলাকায় শক্তি জোরদার করেছে ইউক্রেনও। এই এলাকা সিরিজ হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানানোর পর সেখানে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
ট্রান্সনিয়েস্ত্রিয়ার বর্তমান উত্তজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ এবং নিন্দা জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে এই অঞ্চলটিকেও টেনে আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন রাশিয়ানরা। তবে রাশিয়াও সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, তারা ট্রান্সনিয়েস্ত্রিয়া পরিস্থিতি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
মলডোভায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেন্ট লগসডন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং তার ভাষায়, ‘বন্দুকের নলের মুখে ইউরোপের মানচিত্র পুনরায় আঁকার এই প্রচেষ্টা’ বিশ্বের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ।
তিনি মলডোভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মস্কো ইউক্রেন যুদ্ধ মলডোভা পর্যন্ত বিস্তৃত করতে চায়, এমন কোনও প্রমাণ এখন পর্যন্ত ওয়াশিংটনের কাছে নেই।’ তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধে হেরে যাবেন।’