নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান ছয়জন বিভাগীয় প্রধানকে ফুল দিয়ে ও উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ‘বাংলার মিলনমেলা-২০২২’ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য তাদেরকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সম্মাননাপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা হলেন, অধ্যাপক আফসার আলী, অধ্যাপক একরামুল আজিজ, অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. বিএম রেজাউল করিম, সহযোগী অধ্যাপক আকতার হোসেন ও এমএম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, আমি এমএম কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু কলেজ থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলাম। এই কলেজে পড়তে না পারার কষ্ট রয়েছে। আজ কলেজের বিদগ্ধ শিক্ষকদের উত্তরীয় পরিয়ে আমি সম্মানিত হয়েছি। দারুণ ভালো লেগেছে। সেই অনুভূতি জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। এরকম সমৃদ্ধ আয়োজনে প্রতি বছর প্রিয় শিক্ষকদের এভাবে সম্মানিত করার আশাবাদ জানাচ্ছি।
এর আগে আয়োজকদের পক্ষ থেকে আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আজাদ ও সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। এরপরে অনুষ্ঠান স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এর আগে চর্যাপদ ও পাহাড়ি গানের তালে নৃত্য পরিবেশিত হয়। পরে বাউল সংগীতের দল বাওলিয়ার শিল্পীরা লালন শাহ, শাহ আবদুল করিম, বিজয় সরকারের গান পরিবেশন করেন।
দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধনী ঘোষণা করা হয় এমএম কলেজ ক্যাম্পাসে। সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করেন কলেজের অধ্যক্ষ মর্জিনা আক্তার ও বাংলা বিভাগের ১৯৬২ সালের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন এবং শরিফুল ইসলাম।
এরপর বণার্ঢ্য শোভাযাত্রা শহর ঘুরে শিল্পকলা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করেন।
১৯৬৩ সালের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, এই মিলনমেলায় আসতে পেরে আমি আবেগ্লালুত। বাংলা বিভাগ আমাকে মানুষ রূপে গড়ে তুলেছে। এতো বছর পরে আবার সবার সাথে দেখা হবে তা ভাবতেই পারিনি।
সবশেষে বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন আত্মপ্রকাশের লক্ষ্যে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি এম এম কলেজে প্রথমবারের মত কোনো বিভাগের মিলনমেলা আয়োজিত হলো। এই আয়োজনে ১৯৬২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৪০টি ব্যাচের নিবন্ধিত ৪৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।