কয়রা প্রতিনিধি :
দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছেনা কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের মানুষের। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে ইউনিয়টি। আবারও চোরামুখার কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ৫ গ্রামের অসহায় মানুষ। তবে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধটি মেরামত সম্ভব হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে হাজারো মানুষ।
সোমবার ভোর থেকেই হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন ভাঙা বাঁধের স্থানে। ততক্ষণে ভাটার টান পড়েছে কপোতাক্ষে। ভোর ৬ টায় দূর-দূরান্ত থেকে কেউ হেঁটে, কেউবা নৌকা-ট্রলারে করে নিজ দায়িত্বে ঝুড়ি-কোদাল নিয়ে বাঁধ মেরামতে চলে এসেছেন। মাইক হাতে একজন আহ্বান জানালেন সবাইকে কাজে নামার জন্য। এরপরই শুরু হলো স্বেচ্ছাশ্রমে দক্ষিণ বেদকাশি এলাকার ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের কাজ। কেউ বস্তায় মাটি ভরছেন আবার কেউ মাটির ওই বস্তা নিয়ে ফেলছেন ভাঙা বাঁধের স্থানে। কেউবা ব্যস্ত বাঁধ ও খুঁটি পোঁতার কাজে। বসে ছিলেন না নারীরাও। ঘর্মাক্ত, ক্লান্ত মানুষকে পানি খাইয়ে, এটা ওটা এনে দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত টানা কাজ করে জোয়ারের পানি আসার আগেই বাঁধ মেরামত করে ফেলতে সক্ষম হন প্রায় ৩ হাজার মানুষ।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান বলেন, পানিতে তলিয়ে গেছে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের পাঁচ গ্রাম। ভেসে গেছে তিন হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১০ হাজার মানুষ। বাঁধ মেরামতে বস্তা ও বাঁশ-খুঁটি দিয়ে সহায়তা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মশিউল আবেদিন বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমে মানুষ প্রাথমিকভাবে রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে পেরেছে। পানি আটকানোর পর মূল ক্লোজারে কাজ শুরু করা হবে।
কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে বাঁধ মেরামত কাজের ও পানিবন্দি মানুষের জন্য সহযোগিতা করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।