মানিকগঞ্জের গুড়ের সুনাম ও চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু মৌসুমি গুড় ব্যবসায়ী খেজুর রসের সঙ্গে চিনি ও চুন মিশিয়ে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে। এতে গুড়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী গুড়ের সুনাম রক্ষার্থে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। ২৩ ডিসেম্বর সকাল ৬টার দিকে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা, মজমপাড়া, হাপানিয়া ও গোপিনাথপুরে ভেজালবিরোধী এ অভিযান পরিচালনা করে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ সময় ভেজাল গুড় তৈরির দায়ে তিন গুড় ব্যবসায়ীকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এক মণ খেজুর রসের সঙ্গে এক মণ চিনি ও চুন দিয়ে দুই মণ খেজুরের ভেজাল গুড় তৈরি করা হয়।
জনস্বাস্থ্যের জন্য এর চেয়ে মারাত্মক হুমকি আর কি হতে পারে। পচা বাসি খাদ্যে রোগ ছড়ায়। কিন্তু চিনি ও চুনের সহযোগে তৈরি দ্রব্যটি পানে মানুষ তো বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে পারে। খেজুরের গুড় বাঙালির কাছে শীত মৌসুমের একটি আকর্ষণীয়। কিন্তু এ দেশের মানুষ অখাদ্য খেয়ে চলেছে। কিন্তু আমরা জানছিনে অজান্তে আমরা নিজ হাতে তুলে বিষ খাচ্ছি। এ দৃশ্য মনে হয় শুধু মানিকগঞ্জে নয়, আরো অনেক জায়গায় চলছে এই মানবতা বিরোধী কর্মকান্ড। যশোরের নওয়াপাড়ায় চিনি ও ফিটকিরি দিয়ে মধু তৈরির ঘটনা ধরা পড়ে কিছু দিন আগে। টিস্যু পেপার দিয়ে দই তৈরির ঘটনা এদেশে গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না। বর্তমান সরকার এ সব অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হলেও তারা পরোয়া করছে না। তাদের পেছনে নিশ্চয় খুঁটোর জোর আছে। এসব দোষীদের বিরুদ্ধে সাড়া জাগানো কোনো শাস্তি হচ্ছে না। এ কারণেই জনগণকে অখাদ্য-কুখাদ্য খাওয়াতে তারা পিছুপা হচ্ছে না।
যারা জনস্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে এবং তাদের পেছনে যারা ইন্ধন জোগায় তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। এই অবস্থা যদি সারা দেশে হয় তাহলে এই জাতি আর কত দিন সুস্থ থাকবে এটাই আজ ভাববার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সব ক্ষেত্রে ছাড় দেবার মানসিকতা পরিহার করে প্রতিটি অনিয়ম অবহেলা দুর্নীতি অনাচারের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায় ধীর প্রতিক্রিয়ায় এ জাতি একদিন পুরোটাই অসুস্থ হয়ে পড়বে।