নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্ত্রীর সিজার হওয়ার কথা সকাল ৯টার দিকে। অথচ আলট্রোসোনো রিপোর্ট রয়েছে পাঁচ কিলোমিটার দূরের গ্রামের বাড়িতে। সেই রিপোর্ট আনতে যাচ্ছিলেন জাহিদ হাসান জুয়েল (৩২) নামের টেক্সাইল প্রকৌশলী। তবে শহর থেকে বাড়ি পর্যন্ত আর পৌঁছাতে পারেননি তিনি। চৌগাছা-যশোর সড়কের কয়ারপাড়া নামক স্থানে একটি পরিবহন সাইড দিতে গিয়ে সড়কের পাশে পুঁতে রাখা কংক্রিটের খুঁটিতে আঘাত লেগে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে তার মৃত্যু ঘটে।
রোববার সকাল ৯ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। তিনি যশোরের চৌগাছার সিংহঝুলী ইউনিয়নের মাজালি গ্রামের আব্দুল মালেকের একমাত্র ছেলে। স্বজনরা জানান, ঢাকার তেজগাঁও টেক্সটাইল কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে তিনি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাহিদুলের একটি তিন বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা হওয়ায় চৌগাছা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছেন। গতকাল সকাল ৯টার দিকে তার সিজার করার কথা। তবে রোগীর সাথে আলট্রাসোনো রিপোর্ট না থাকায় জাহিদ হাসান সকালে চৌগাছা শহরের ওই ক্লিনিক থেকে নিজের বাড়ি যাচ্ছিলেন রিপোর্ট আনতে। বাড়িতে যাওয়ার পথে চৌগাছা-যশোর সড়কের কয়ারপাড়া মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসকে সাইড দিতে যেয়ে সড়কের পাশে (বাঁকে) পুতে রাখা নিরাপত্তা খুঁটিতে মেরে দেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরের করেন। তবে অ্যাম্বুলেন্সে উঠানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। এদিকে জাহিদুল মারা যাওয়ায় তার সন্তান সম্ভাবা স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন করেনি স্বজনেরা। চিকিৎসকের পরামর্শে আজ সোমবার করা হবে বলে পরিবারের সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাসুম বিল্লাহ বলেন, আঘাতের ফলে তার বাম হাত ও পা ভেঙে যায়। এছাড়া বুকে গুরুতর আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ না থাকায় নিহতের পিতার আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।