দৈনিক কল্যাণসহ বিভিন্ন দৈনিকে ২৬ ডিসেম্বর একটি খবর প্রকাশ হয়েছে। ওই খবরে বলা হয়েছে, মাদ্রাসা ছাত্রীকে ফুসলিয়ে বিয়ে করা ও অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মানিকহার দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক খায়রুল ইসলামকে আটকের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১০ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানিকহার গড়েরডাঙ্গার শিক্ষক, শিক্ষার্থী অবিভাবকরা এ মানববন্ধ কর্মসূচি পালন করে
তালা উপজেলার মানিকহার দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক খায়রুল ইসলাম (৪০) গত ২১ নভেম্বর একই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শান্তা খাতুনকে ফুসলিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। শিক্ষককের এহেন অনৈতিক কর্মকান্ডে এলাকার সচেতন মহল বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন। এর বিচার ও তাকে গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা অফিসসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন। ওই মাদ্রাসার শিক্ষক খায়রুল ইসলাম ঘটনার পর থেকে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে নিয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
আমরা কথায় কথায় নৈতিক চরিত্র গঠনে ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কিন্তু আসলে কি ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করলেই নৈতিক চরিত্র গঠিত হয়। আমরা মনে করি কথাটা শতভাগ সঠিক নয়। তাই বলে আমরা ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ ও এর প্রচার প্রসারের বিপক্ষে নই। উন্নত নৈতিক চরিত্র গঠনে ধর্মীয় শিক্ষা অন্যতম মাধ্যম এতে কোনো সন্দেহ নেই। শুধু ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে কারো চরিত্র যে উন্নত করা যায় না তার জঘন্যতম প্রমাণ ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিতরাই রাখছে। সর্বশেষ প্রমাণ রাখলেন তালার ওই শিক্ষক।
আমরা জানি যারা মাদ্রাসায় পড়ে তারা কুরআন, হাদিসের অনেক কিছু জানেন। তালার ওই মাদ্রাসা শিক্ষক কি কিছুই শেখেননি। না কি শিখলেও তা মানেন না? মানলে মোহ কাটিয়ে তিনি সৎ পথে চলতে পারছেন না কেন? শিক্ষার জীবনের পুরোটা সময় তিনি ওস্তাদদের কাছে পড়েছেন। কি নৈতিকতা শিক্ষা তারা পেয়েছেন? তারা মানুষকে ধর্মের অনেক কথা শুনিয়েছেন তারপরও তারা এই নৈতিকতা বর্জিত জঘন্য কাজ করলেন। আলেম নামধারী জালেমদের মুখোশ একের পর ্এক খুলেই চলেছে। এতে আল্লাহ ভীরু সৎ আলেম সমাজও সন্দেহের মধ্যে পড়েছেন।
আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি মানুষের ধর্মানুভূতিকে পুঁজি করে এ ধরনের কাজ একের পর এক করেই যাচ্ছে। ধর্মের মর্মবাণী এদেরকে স্পর্শ করতে পারছে না। আসল কথা হলো পরিবার হচ্ছে সর্বোত্তম পাঠশালা। এই পরিবার থেকে যদি শিক্ষাটা না আসে তাহলে যে বিষয়ে যত শিক্ষাই গ্রহণ করা হোক না কেন আসল শিক্ষায় ঘাটতি থেকে যায়। আজ যে সব লেবাসধারী আলেমরা এ ধরনের অপরাধ করছে তাদের পারিবারিক খবর নিলে খারাপ চিত্রই আসবে বলে আমাদের ধারণা। ধর্মীয় শিক্ষায় উন্নত নৈতিক চরিত্র গঠিত হয় এ কথা ঠিকই, কিন্তু এ শিক্ষাটা পারিবারিক পরিমন্ডল থেকে শুরু হতে হবে।