নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল ও যশোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী আলমগীর কবির সুমনের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক বন্ধুত্ব শহরবাসীর অজানা নয়। দু’জনই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি গ্রুপের রাজনীতি করতেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর হলো গ্রুপ পরিবর্তন করে আনোয়ার হোসেন বিপুল এখন যশোর-৩ আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ বলয়ের রাজনীতি করেন। হাজী সুমন অবশ্য শাহীন চাকলাদারের বলয়েই আছেন। দুইজন দুই মেরুর রাজনীতি করলেও তাদের মধ্যে ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল। মাঝেমধ্যে তাদের একসাথেও দেখা গেছে। কিন্তু এখন সেই বন্ধুত্বের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে।
গত ৩০ এপ্রিল শহরের রেলগেট এলাকায় আনোয়ার হোসেন বিপুলের উদ্যোগে যুবলীগের ব্যানারে চলছিল ঈদবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। সেখানে হামলার ঘটনা ঘটে। এজন্য হাজী সুমনকে দায়ী করেন আনোয়ার হোসেন বিপুল। এই ঘটনার পর শহরবাসীর কাছে প্রশ্ন জাগছে যে, দুই বন্ধুর সম্পর্ক কি শেষ হয়ে গেলো? তারা কি এখন মুখোমুখি অবস্থানে!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন বিপুল ও হাজী আলমগীর কবির সুমনের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে গত এক যুগ আগে। তাদের ব্যবসা, রাজনীতি ও বন্ধুত্বের কথা শহরবাসীর অজানা নয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত এই দুই জনপ্রতিনিধি গড়ে তোলেন ব্যবসা। মূলত কাস্টমের নিলামপণ্য কিনে তারা বিক্রি করতেন। তারা আসন্ন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে তাদের বায়োডাটা কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। এতেও তাদের মধ্যে তেমন একটা দূরত্ব লক্ষ্য করেননি শহরবাসী। কিন্তু ১৫ দিন আগের একটি ঘটনার জের ধরে এক সময়ের মধুর সম্পর্ক এখন সাপে-নেউলে। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারছেন না। এমনকি মুখ দেখাদেখি বন্ধ। তারা কাছের মানুষদের কাছে বিস্ফোরক মন্তব্য করছেন।
জানতে চাইলে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, হাজী সুমনের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। রাজনীতি করতে এসে পরিচয় ঘটেছিল। অনেক আগেই সেটি শেষ হয়ে গেছে। কেননা সে নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। গত ৩০ এপ্রিল যুবলীগের ঈদবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে হাজী সুমন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তার পোষ্য সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা করেছে। কামরুজ্জামান মামুন নামে এক যুবলীগ নেতাকে ছুরিকাহত করা হয়েছে। যা খুবই জঘন্য কাজ। যোগ্যতা ছাড়া এখন সে জেলা যুবলীগের সেক্রেটারি হতে চাচ্ছে। যা দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে পৌর কাউন্সিলর হাজী আলমগীর কবির সুমন বলেন, আনোয়ার হোসেন বিপুলের সাথে আমার কোন ধরণের সম্পর্ক নেই। সে এখন যে, অর্থবিত্তের মালিক সেটি আমার কারণে হয়েছে। এ ব্যাপারে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।