রায়হান সিদ্দিক: শুক্রবার দৈনিক কল্যাণে ‘সব মৌসুমেই বাস টার্মিনালে দুর্ভোগ’ শিরোনামে প্রতিবেদন বের হওয়ার পরে দ্রুততার সাথে উন্নয়ন কাজ শুরু করেছে যশোর পৌরসভা। বিষয়টি ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন বাস কাউন্টার মালিক, বাসের শ্রমিক ও যাত্রীরা। গতকাল সরেজমিনে বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ ভরাটের জন্য বালি ও ইট বেছানোর দৃশ্য দেখা গেছে।
টার্মিনাল আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, টার্মিনাল হওয়ার পর এই প্রথম কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার দৈনিক কল্যাণে টার্মিনালের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করার পরপরই পৌরসভা থেকে বেশ কয়েক গাড়ি বালি ও ইট বিছিয়ে খানাখন্দ ভরাট করা হয়েছে। এর জন্য আমরা পৌর মেয়রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে অনুরোধ থাকবে দ্রুততার সাথে টার্মিনালের উন্নয়ন কাজ সুষ্ঠভাবে যেন সম্পন্ন করা হয়।
কেশবপুর কাউন্টারের মোজাম্মেল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবহেলিত। অবশেষে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।
শ্রমিক ফারুক হোসেন বলেন, হালকা বৃষ্টি হলেই টার্মিনালে হাঁটু পানি জমে। আর অনাবরত বাসের যাতায়াতের কারণে কাদা হয় অনেক বেশি; যা সহজে শুকায় না। আমরা নিরুপায় হয়ে কাদা পানির ভেতরে কাজ করি। গত কয়েকদিন একটানা বৃষ্টি হওয়ায় আমরা খুব বিপদে ছিলাম। অবশেষে পৌর মেয়র সুদৃষ্টি দিয়েছেন। দ্রুতই টার্মিনালের সকল কাজ সম্পন্ন করে একটা নান্দনিক ও আধুনিক টার্মিনাল উপহার দেয়ার জোর দাবি করছি।
জানতে চাইলে যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। প্রতিদিন এইখান থেকে শত শত যাত্রী জেলা এবং জেলার বাইরে যাতায়াত করে থাকে। সাধারণ মানুষকে যাতে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সে জন্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নান্দনিক ও আধুনিক করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সিআরডপি প্রকল্পের আওতায় ১১ কোটি ২ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা হয়েছে। ঠিকাদার নির্বাচন করে পাবলিক টয়লেটের কাজও শুরু হয়েছে। এছাড়া যে টিউবয়েলগুলো অকাজো সেগুলো সচলসহ সার্বিক উন্নয়ন কাজের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের কার্যক্রম চালু হয়। এখান থেকে ১৮টি রুটে ৫শ থেকে ৬শ বাস চলাচল করে। যাতে ১৫-২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। তবে টার্মিনাল চালু হওয়ার পর থেকে যাত্রী এবং শ্রমিকদের বিশ্রামের জায়গা থাকলেও দীর্ঘদিন তা সংস্কার করা হয়নি। কিন্তু টার্মিনাল উন্নয়ন করার জন্য লোকাল ও দূরপাল্লার গাড়ি থেকে উন্নয়ন ফি বাবদ বছরে প্রায় ৬০ লাখ টাকা টোল আদায় করে যশোর পৌরসভা। এ পর্যন্ত আনুমানিক আট থেকে দশ কোটি টাকা পৌরসভার কোষাগারে গেছে।