এস এম মিজানুর রহমান, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
ঋণের দায় মিটানোসহ পারিবারিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে পাড়ি জমিয়েছিল এক সন্তানের জননী নাসিমা খাতুন (২৯)। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের শিকার হয়ে তাকে মাত্র দেড় বছরের মধ্যে জন্মভূমিতে ফিরতে হয়েছে।
জীবন্ত এক বুক আশা নিয়ে রওনা হলেও শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাঠি গ্রামের ওই গৃহবধূ স্বদেশে ফিরেছেন লাশ হয়ে। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার নাসিমা স্থানীয় হাসপাতালে দশদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার পর তার মৃত্যু হয়। স্বজনদের দুই মাসের চেষ্টায় বুধবার মৃতদেহ দেশে পৌছালে বৃহস্পতিবার জানাজা শেষে পিতার ভিটায় শেষ ঠাই মেলে অসহায় ওই গৃহবধূর।
নাসিমার ভাই হেলাল হোসেন জানান, সংসারের অভাব মোচনসহ ঋণ পরিশোধের চিন্তায় স্বামী সিরাজুল ইসলামের উৎসাহে ২০২০ সালের জুন মাসে ওমানে যায় নাসিমা। হাড় ভাঙা খাটুনির টাকায় ঋণ পরিশোধের পর পরিবারে সুখের দেখা মিলতেই আড়াই মাস আগে স্বামী সিরাজুল তাকে তালাক দিয়ে পুনরায় বিয়ে করে। দেশ থেকে এমন খারাপ সংবাদ পাওয়ার পাঁচ দিন পরে রাস্তা পারাপারের সময় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় তার বোন। দশদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাকে মৃত ঘোষণা করলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় মৃতদেহ দেশে আনা হয়।
বিদেশে যেয়ে উপার্জিত অর্থে স্বামী সংসারের ঋণ শোধ করা নাসিমা ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার বলে দাবি তার পিতা বরকত গাজীর। ষাটোর্ধ্ব বয়সী ওই বৃদ্ধ জানান, মেয়ের পরিশ্রমের টাকায় সংসারের অভাব ঘুচতেই তাকে তালাক দেয় জামাতা সিরাজুল। বিদেশে অসহায় হয়ে পড়া তার মেয়ে স্বামীর তালাক ও দ্বিতীয় বিয়ের কষ্ট সইতে না পারার পরিণতিতে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তবে অনেক চেষ্টা করেও নাসিমাকে তালাক পাঠানো সিরাজুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।