নেংগুড়াহাট (মণিরামপুর) প্রতিনিধি
মনিরামপুর উপজেলার নেংগুড়াহাট এলাকায় শীতের শুরু থেকেই কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গ্রামীণ নারীরা।
আমাদের খাদ্য তালিকায় কুমড়ো বড়ি একটি জনপ্রিয় সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। শীতকালে গ্রামী নারীরা পাড়া মহল্লায় দল বেঁধে কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন। চিরায়ত বাংলার এক লোকায়ত উৎসব বড়ি তৈরি। এ উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে কুমড়ো বড়ির বিদেশ পাড়ি দেয়ার মধ্য দিয়ে। মণিরামপুরের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে কুমড়ো বড়ি।
প্রতিবছর শীতের শুরুতেই কুমড়ো বড়ি তৈরি শুরু হয়। বড়ি তৈরিরর প্রধান উপকরণ হলো কুমড়োবড়ি মাসকলই ও চাল কুমড়ো। তবে বড়ির স্বাদ ও মান ভিন্ন করার জন্য অনেকেই কলইয়ের সঙ্গে, অন্যান্য মসলা জাতীয় দ্রব্য দিয়েও বড়ি তৈরি করে থাকেন।
শীত আসলে নবান্ন উৎসবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই চলে কুমড়ো বড়ি তৈরির উৎসব। অনেকেই নিজেদের উৎপাদিত কলই ও কুমড়া দিয়ে তৈরি করে থাকেন বড়ি। অনেকেই আবার বাজার থেকে ক্রয় করে তৈরি করে থাকেন। তবে কুমড়া বড়ির এ উৎসবকে কেন্দ্র করে লাভবান হয়ে থাকেন কলই ও কুমড়া চাষিরা।
বর্তমানে প্রতিকেজি মাসকলই ১৩০ টাকা এবং প্রতিপিস চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। চালুয়াহাটি ইউনিয়নের তরুনী শাহনাজ পারভীন পপি জানান- শীত আসলেই কুমড়া বড়ির কথা মনে পড়ে যায়। শীতের রৌদ্রজ্জল সকালে পরিবার ও প্রতিবেশি কয়েকজন নারী মিলে বড়ি তৈরির মজাই আলাদা। মশ্মিমগর গ্রামের গৃহবধূ ফরিদা পারভীন বলেন, যেকোন তরকারির সাথে কুমড়ো বড়ি দেয়া যায়। এতে তরকারির স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়।
বাণিজ্যিকভাবে কুমড়ো বড়ির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের কৃষি উপ-সহকারী মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, কুমড়া বড়ির প্রধান উপকরণ মাসকলই। এলাকায় এর চাহিদাও প্রচুর। তাই মাসকলই চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কেশবপুর হাসপাতালের চিকিৎসক আনারুল জামানের (টুকু) বলেন, কুমড়োয় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও খনিজ দ্রব্য রয়েছে, খনিজের মধ্যে বিশেষ করে আয়রণ, ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম এজন্য কুমড়ো বড়ি সব শ্রেণীর মানুষ খেতে পারে।