নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন শনিবার রাতে এ কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন। তবে এতে সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি’র সেখানে স্বাক্ষর নেই। গতকাল কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী কমিটির বিষয়ে তার (শাহীন) কাছে প্রশ্ন করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলেছেন। তিনি বলেছেন, কমিটি অনুমোদন দিতে হলে জেলা আওয়ামী লীগের সভায় উপস্থাপন করতে হয়। সেখানে আলোচনা শেষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথ স্বাক্ষর করে অনুমোদন দেন। কিন্তু সেটা না হলে কমিটি অবৈধ।
এদিকে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী স্থান পাননি। আবার অনেক পরিবারের দুই তিনজন কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলীর দুই শ্যালক (দুই বউয়ের দুই ভাই) মারুফ হোসেন সহসভাপতি ও মনিরুজ্জামান তরুন হয়েছেন সহ দপ্তর সম্পাদক এবং আপন ভাই নিজাম উদ্দিন সদস্য ও চাচাত ভাই সুলতান মাহমুদ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন। সুলতান মাহমুদ ছাত্রদল করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া একই পরিবারের তিনজন পদ পেয়েছেন। ইদ্রিস আলী পেয়েছেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও তাই ভাই ফরিদুজ্জামান বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং ভাইপো কামরুজ্জামান বাচ্চু হয়েছেন সদস্য।
এরমধ্যে দুই ভাইকে রাজনৈতির মাঠে দেখা যায়নি। বিএনপি আমলে ফরিদুজ্জামান দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। আর ইদ্রিস আলী বেনাপোলে সিএন্ডএফ’র ব্যবসা করেন।
সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর কবির খান জামান কোনদিনই রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। ঢাকায় হজ্ব এজেন্সির সাথে যুক্ত। তাকে সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত করায় অবাক হয়েছেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। অথচ গত কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি আতিয়ার সরদারকে ৬ নং সহসভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে। তার সম্মানহানি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনীতিকরা।
সাবেক আমলা বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ অধিকারীকে এ কমিটির ৮ নং সহসভাপতি করা হয়েছে। তিনি কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়া এই কমিটিতে বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে জুনিয়রদের নিচে রাখা হয়েছে। সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ আজগর আলীকে ৩০ নং সদস্য করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত জুনিয়রদের তার উপরের সদস্য করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম সরোয়ারকে সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক করা হয়েছে। রাজনৈতিক দক্ষতা অনুযায়ী তার আরো উপরের বা সম্মানজনক পদে আসার কথা ছিলো বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। উপজেলা যুব মহিলা লীগের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক সালমা খাতুন ও যুগ্ম আহ্বায়ক রনি ভৌমিককে এ কমিটিতে সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে। যা দেখে হতভাগ হয়েছেন নেতাকর্মীরা।
জানতে চাইলে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী দৈনিক কল্যাণকে বলেন, তারা যে কমিটি জেলা শাখার জমা দিয়েছিলেন সেটাই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যারা যোগ্য তাদের কমিটিতে রেখে অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হয়। এক পরিবারের একাধিক হলেও তারা তো আওয়ামী লীগ পরিবারের বাইরের কেউ না।