নিজস্ব প্রতিবেদক: বেনাপোল বন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত। গত ১ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মধ্যে ৩৪ হাজার ৪২৮ জন যাতায়াত করেছেন। এসব যাত্রীদের মধ্যে ভারতে গেছেন ১৮ হাজার ৫৮৯ জন এবং ভারত থেকে ফিরেছেন ১৫ হাজার ৫৩৯ জন।
করেনার বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত বৃদ্ধির পাশাপাশি এ পথে বেড়েছে আমদানি রফতানি বাণিজ্যও। ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে আমদানি হয়েছে ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি ও ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন পণ্য রফতানি হয়েছে। তবে বন্দরে জায়গা সংকট আর যাত্রী সেবার বৈধ সুবিধা বঞ্চিত হয়ে ভোগান্তি বেড়েছে যেমন বাণিজ্যে, তেমনি যাত্রী যাতায়াতেও।
ভারতগামী যাত্রী অনিমেস হালদার জানান, ভারত ভ্রমণে নানান শর্তের কারণে এতদিন ভারতে যাওয়া জরুরি দরকার হলেও তিনি যেতে পারেননি। তবে এখন সব শর্ত উঠে ভিসা সহজ হওয়ায় ভারতে যাচ্ছেন বেড়াতে। বাংলাদেশে ভোগান্তি কিছুটা কমলেও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে পুলিশের জনবল কম থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রোদ, বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে। জনবল বৃদ্ধি আর যাত্রী ছাওনি তৈরি করা হলে এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, করোনার কারণে নানান শর্ত মানতে চাহিদা মত পণ্য আমদানি, রফতানি করা সম্ভব হচ্ছিলনা। তবে এখন শর্ত প্রত্যাহারে ঝামেলা কমেছে। কিন্তু বন্দরে জায়গা সংকট আর ক্রেন, ফর্কক্লিপের সমস্যায় পণ্য লোড, আনলোড ব্যাহত হচ্ছে।
বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়। এছাড়া চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা, গ্রহণ ও ভ্রমন ভিসায় বছরে প্রায় ১৮ লাখ যাত্রী যাতায়াত করে। বাণিজ্য খাতে সরকারের ৬ হাজার কোটি টাকা ও ভ্রমণ খাতে প্রায় ১শ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয় বেনাপোল বন্দর থেকে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন হলে আমদানি বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত সংখ্যা আরও বাড়বে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, যাত্রী সেবা বাড়াতে প্যাসেনঞ্জার টার্মিনাল তৈরিতে নতুন জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে বলেও জানান এ বন্দর কর্মকর্তা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি জানান, গত ১ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মধ্যে ৩৪ হাজার ৪২৮ জন। এসব যাত্রীদের মধ্যে ভারতে গেছে ১৮ হাজার ৫৮৯ জন। ভারত থেকে ফিরেছে ১৫ হাজার ৫৩৯ জন। যাত্রী সেবা বাড়াতে ইতিমধ্যে ইমিগ্রেশনে কাউন্টার বৃদ্ধি করা হয়েছে। ক্যানসার ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা কাউন্টারে সেবা দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে দ্রুত যাত্রীরা যাতে পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে পারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।