যশোরে এক সময় সন্ত্রাসের জন্য কুখ্যাতি ছিল। সে সময় প্রতি মুহূর্তে খৈ-মুড়ির মত বোমা ফুটতো। বিশেষ করে রাতের অবস্থা ছিল ভয়াবহ। যদি এখন প্রশ্ন করা হয় বর্তমানের কুখ্যাতি কি? সবাই এক বাক্যে বলে ফেলবেন মশা। ওই সময় যেমন খৈ-মুড়ির মত বোমা ফুটতো এখন সঙ্গীতানুষ্ঠানের মত গান শোনা যায়। বিশেষ করে রাতের বেলা মশার গুনগুনানী আর সেই সাথে মনের আনন্দে রক্ত চোষার জন্য হুল ফুটিয়ে মানুষকে জারাজারা করছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই।
দৈনিক কল্যাণে মশা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। পৌরসভার সচিব বলেছেন স্প্রে করে নাকি মশা মরছে না। আর মশা নিধনের তেমন কোন পরিকল্পনাও নেই। পৌরবাসী বলছেন, মশার কয়েল জ¦ালিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। মশা মরছেতো নাই-ই। তারপরও কয়েলের ধোয়ায় মশা সরেও যাচ্ছে না। বিষ্ময়কর ব্যাপার বটে।
অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে যশোর পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধন নয় মশা লালন করছে। তাই এই ক্ষুদ্র কীটের জীবনীশক্তি বেড়ে গেছে। যে কারণে কয়েলের ধোয়ায় মরছেও না আবার পালাচ্ছেও না। অধিকতর নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পৌরসভা পত্তন করা হয়। কিন্তু যশোর পৌরসভা কোন লক্ষ্যে পত্তন করা হয়েছিল তা আজ পৌরবসীর জানার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবিশ^াস্য হলেও সত্যি যে, এই পৌরসভা এলাকায় মশার যে তান্ডব তার এক শতাংশও অবহেলিত গ্রামে নেই। তাহলে পৌরসভায় বর্ধিত ট্যাক্স দিয়ে কি লাভটা পাচ্ছেন পৌরবাসী। শুধু একজনের একখানা চেয়ার জুটলেই কি নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত হয়ে গেল। এর জবাব কে দেবে।
শহর জুড়ে নোংরা অবস্থা মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রায় রোডে দেখা যায় ড্রেনের উপচে পড়া নোংরা পানিতে সয়লাব। শুধু তাই নয়, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তুপ। ডাস্টবিন না থাকায় পৌরবাসী তাদের বাসার ময়লা আবর্জনা রাস্তায় ফেলে রাখে। তা পরিষ্কার করার তাগিদে নিই পৌর কর্তপক্ষের। ড্রেনের নোংরা পানি ও ময়লার স্তুপ মশার নিরাপদ প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা উদাসিনতা দেখলে মনে হয় পৌরসভা কর্তৃক মশা উৎপাদনের আদর্শ প্রজনন কেন্দ্র।
নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা পৌরসভার প্রধান দায়িত্ব। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ‘ আমাকে ভোট দিয়ে দেশ ও দশের সেবা করার সুযোগ দিন’ এর প্রতি খেয়াল করা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পবিত্র দায়িত্ব। না করে নিজ স্বার্থ হাসিলে তৎপর থাকলে নাগরিকরা সময় মত জবাব দিতে ভুল করবেন না।