নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় মুসলিম একাডেমি। স্কুলের এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনদের নিয়ে মিলনমেলা ছিল শুক্রবার। দিনব্যাপী এ আয়োজনে মধুর স্মৃতিচারণ, শোভাযাত্রা, নাচ গান ভুরিভোজ আড্ডায় ছিল ভরপুর।
দীর্ঘদিন দেখা না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেন তারা। এ যেন শৈশবে ফিরে যাওয়া। বন্ধুদের কাছে পেয়ে কুশল বিনিময়ের সাথে কোলাকুলির পরে চলে ফটোসেশন ও সেলফি।
বেলা ১১ টায় মিলনমেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে সকাল ৯ টা থেকে বিদ্যালয় চত্বর সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে ৮৭ ব্যাচের সকল শিক্ষার্থী বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে উপস্থিত হলে বর্ণিল টিশার্ট পরিধান আর মাথায় ক্যাপ পরে ব্যান্ডপার্টির বাজনার তালে তালে নেচে গেয়ে শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ফের বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। বিকালে এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচের মিলনমেলা বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়টির সাবেক কৃর্তী শিক্ষার্থী ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি। পরে তিনি ৮৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে কেক কাটেন। প্রিয় শিক্ষার্থী ও সংসদ শাহীন চাকলাদার এমপিকেও পেয়ে খুশিতে আপ্লুত হয়ে উঠে বিদ্যালয়টির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষকমন্ডলী। কৃর্তী এই শিক্ষার্থীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ক্রেস্ট দিয়ে জানানো হয় সম্মাননা। একই সাথে প্রিয় শিক্ষকদের কাছে পেয়েই পুরনো স্মৃতিতে ফিরে যান এমপি শাহীন চাকলাদার। ঘণ্টাখানেকের আড্ডার পরে চলে ভুরিভোজ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি। স্মৃতিচরণে তিনি বলেন, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা খুব কঠিন। সেই দুঃসাহসিক কাজটি করে দেখিয়েছে যশোরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ মুসলিম একাডেমি স্কুলের এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচ। তারাই এই বিদ্যালয়ের প্রথম কোন মিলনমেলায় পরিণত করেছেন। ৭৩ বছর বয়সী এই বিদ্যালয়টি তেমন কোন উন্নতি হয়নি। যা একটু হয়েছে এই সরকারের সময়ে। সামনের বছর এই বিদ্যালয়টির সবচেয়ে বড় মিলনমেলা হবে। সেই মিলনমেলায় মুসলিম একাডেমি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে। সবাই মিলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসাথে মিলনমেলা এক ভিন্ন উৎসবে রূপ দেব। এই স্কুলটির সাবেক শিক্ষার্থীরা আজ অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। আমরা সকল শিক্ষার্থী যদি ঐক্যবদ্ধ হই; তাহলে এই স্কুলের আমূল পরিবর্তন হবে। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়টিতে শৈশবে কাটানোর কয়েকটি ঘটনা স্মৃতিচারণ করে এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচের মিলনমেলার এই আয়োজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদ্যালয়টির সমস্যাগুলো সমাধান করার আশ্বাস দেন এমপি শাহীন চাকলাদার। ‘এসএসসি ৮৭ ব্যাচ মিলনমেলার’ আহ্বায়ক মীর মঈন হোসেন মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুসলিম একাডেমির প্রধান শিক্ষক পল্লব কান্তি ঘোষ ও সাবেক ক্রীড়া শিক্ষক রওশন আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ৮৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও চৌগাছা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয়। স্মৃতিচারণ করেন সাবেক শিক্ষার্থী লাবু জোয়াদ্দার, পলাশ কুমার, রাশেদ সুলতান। এছাড়া অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউল হাসান হ্যাপী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগনেতা রেজাউল ইসলাম, যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জ্যোৎস্না আরা মিলি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবলীগনেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েল।