যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য বরেণ্য অনুজীব বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার স্মৃতিশক্তি ও হার্টের ওপর প্রভাব ফেলে। ব্রেন, মাথা বা গলার টিউমারের কারণও হতে পারে। একজন বিজ্ঞানী এ উদ্বেজনক ম্যাসেস দিলেও অভিভাবকরা মোটেই সতর্ক হচ্ছে না। অভিভাবকরা নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছে তা তারা টের পাচ্ছে না। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সেই কথাটাই বলতে হয় ‘কামানের গোলা যখন কোলের মধ্যে এসে পড়বে তখন বুঝবে যুদ্ধ কাকে বলে’।
দেশ জুড়ে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার চলছে। শিশুরাও এ থেকে বাদ নেই। হাল আমলে মোবাইলের অপব্যবহার দারুণভাবে বেড়েছে। আজকাল প্রাথমিকের নিচের শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে মোবাইল দেখা যায়। এই মোবাইলটা নিশ্চয় শিশু শিক্ষার্থীর অভিভাবক কিনে দিয়েছেন। কিন্তু কি প্রয়োজনে একজন অভিভাবক তার কোমলমতি সন্তানটির হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছেন তা কি তিনি একবারও ভেবে দেখেছেন? অভিভাবকরা কতটা অসচেতন হলে এ কাজটি করতে পারেন তা তারা একবারও ভেবে দেখেন না। শিশু শিক্ষার্থী মোবাইল হাতে নিয়ে যখন স্কুলের পথে ওঠে তখন এ দৃশ্য বিবেকবান মানুষকে ভাবিয়ে না তুলে পারে না। সব চেয়ে বড় ক্ষতির কথা হলো, যে অভিভাবক তার অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানটির হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছেন তিনি তার সন্তানটির মোবাইল অপারেট করা নিয়ে গৌরব করেন। তিনি ভাবেন তার সন্তানটি এতো অল্প বয়সে মোবাইলের বিভিন্ন ফাংশন বুঝে ফেলেছে। এর অর্থ তার সন্তানটি জ্ঞান গরিমায় সেরা হয়ে ওঠছে। কিন্তু সেটা যে আদৌ ঠিক নয় তা যতক্ষণ না বুঝবেন ততক্ষণ ধরেই নিতে হবে এই মোবাইল প্রযুক্তি তার সন্তানটিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আজকাল স্কুল-কলেজের পথে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে মোবাইলে ফেসবুক ব্যবহার করতে দেখা যায়। তারা পথ দিয়ে যাচ্ছে নাকি বেপথে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল থাকে না। আর এই বেপথে চলতে চলতে একদিন সে জীবনের বেপথে ধাবিত হয় এবং হচ্ছেও। সরকার অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ের বিরুদ্ধে কঠোরতা আরোপ করেছে। কিন্তু এই মোবাইল প্রযুক্তির অপপ্রয়োগে বেশুমার অপ্রাপ্তবয়স্করা বিয়ে করে ফেলছেন। অভিভাবকদের ছাড়াই তারা মোবাইলে যোগাযোগ করে এই কাজটি করেই যাচ্ছে।
অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে তাদের সন্তানদের হাতে মোবাইল দেবার বিষয়ে। স্কুল কলেজে যাবার সময় কেন তারা মোবাইল নিয়ে যাবে, এটা প্রত্যেক অভিভাবককে অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে। এমনও দুঃখজনক খবর কানে আসে যে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে মোবাইল নিয়ে গেলে শিক্ষকরা ক্লাস টাইমের জন্য মোবাইলটা নিয়ে নিলে এক শ্রেণির অভিভাবক নাকি মারমুখি হয়ে স্কুলে চড়াও হয়। এটা বড় সর্বনাশের আলামত।
মোবাইল ফোনের অপব্যবহার : উদ্বেগজনক ম্যাসেস
