যশোরের বিভিন্ন স্থানে হত্যাকা-ের ঘটনা দিনকে দিন উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে। এসব হত্যাকা- কেবল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের নাগালের বাইরে দূর-দূরান্তের গ্রাম-গঞ্জে ঘটেছে তা নয়, কর্তৃপক্ষের নাকের ডোগায় জেলা শহরে ঘটছে। হত্যার শিকার হতভাগ্যদের স্বজনদের সান্ত¦না পাবার মতো কোনো দৃষ্টান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্থাপন করতে পারছে না।
মে মাসে জেলায় ৮ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। পৌরসভার কাউন্সিলরসহ একাধিক ব্যক্তি ছুরিকাঘাত ও জখমের শিকার হয়েছেন। ছিনতাই, চুরিতো আছেই। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষ আতংকিত। সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ বলছেন, বিশেষ করে যশোর সদর অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। সর্বত্র ভীতি বিরাজ করছে শহরে। ৩ মে কেশবপুরের রামচন্দ্রপুর গ্রামের রিপন হোসেন তার স্ত্রী মেরিনাকে (২২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ১৬ মে ঝিকরগাছার সোনাকুড় গ্রামে সখিনা বেগমের (৪২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৭ মে সদরের চাঁনপাড়া গ্রামে পিতার হাতে খুন হন রুহুল আমিন (১৫)। ২১ মে সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রামের ইরয়ান গাজী (২৫) প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মারা যান। ২২ মে সদরের কৃঞ্চবাটি গ্রামের রাসেল হোসেনের (২৪) গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৯ মে শহরের নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে আফজাল হোসেনকে (২৮) কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। ৩০ মে ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবুলকে কুড়াল দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। একই দিন বাঘারপাড়ার পাইকপাড়ায় চোখ উপড়ে, শ্বাসরোধ ও পুরুষাঙ্গ কেটে নকিম উদ্দিন (৬০) নামে এক শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। ৩০ মে শহরের কাজিপাড়ায় পাইলিং করতে গিয়ে মাটির নিচে একটি ড্রামের মধ্যে থেকে মানুষের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
এভাবে প্রতিনিয়ত হত্যা জনিত কারণে লাশের মিছিল বাড়ছে। যশোর যেন মৃত্যু উপত্যাকায় পরিণত হতে যাচ্ছে। এসব ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির খন্ড চিত্রমাত্র। প্রতিনিয়ত অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে জনগণ দারুণভাবে উদ্বিগ্ন। আতঙ্কে কাটছে তাদের প্রতিটি মুহূর্ত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সব ঘটনার খবর প্রকাশিত হচ্ছে। কোনো একটা রিয়োগান্ত ঘটনা ঘটে গেলেই পুলিশ আত্মপক্ষ সমর্থন করে নানা রকম বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। এতে আর যাই হোক জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। সব মিলেয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের যেন একটা জগাখিচুড়ি অবস্থা চলছে।
নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা পুলিশের ওপর বর্তেছে। ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ এ কথা কেবল স্লোগানে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে তার দৃষ্টান্ত স্থাপন সবার কাম্য।