নিজস্ব প্রতিবেদক :
রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন যশোর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা। তিনি জেলি পুশকৃত চিংড়ি মাছ জব্দ করে আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এ অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ এ ব্যাপারে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত ২ জুলাই যশোরের রাজারহাট থেকে এক ট্রাক জেলি পুষকৃত চিংড়ি মাছ জব্দ করে র্যাব-৬ যশোর ক্যাস্পের সদস্যরা। এই অভিযানে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা মৎস্য অফিস অংশ নেন। জব্দকৃত ট্রাক থেকে এক টন জেলি পুষকৃত চিংড়ি মাছ জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় মাছের মালিক জেলার কেশবপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে রুবেল হোসেনকে। এই মাছ জব্দ করে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনা হয়। সেখানে জব্দকৃত মাছের মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সাথে জব্দকৃত মাছ সব ধ্বংস না করে এক থেকে দেড়শ’ কেজি মাছ ধ্বংস করা হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ কুমার দাস সব মাছ ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়ে চলে যান। কিন্তু বাকী মাছ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা ও সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা জয়নূর ইসলাম ধ্বংস না করেই নিজেরাই আত্মসাৎ করেন।
সূত্র জানায়, মৎস্য কর্মকর্তারা হামিদপুর এলাকার এক মাছ ব্যবসায়ীর কাছে ৫০০ টাকা কেজি দরে ৮০০ কেজি মাছ বিক্রি করে দেন। এভাবে এই দুই মৎস্য কর্মকর্তা প্রায় ৪ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে দেন।
সূত্র জানায়, এরপর ৬ জুলাই যশোরের মুড়লি থেকে জেলি পুশ করা আরো একটি চিংড়ির চালান জব্দ করা হয়। ওই চালানে ১৪ কার্টুন জেলি পুশ করার অভিযোগে মুড়লি রেলক্রসিংয়ের কাছ থেকে জব্দ করা হয়। এ সময় সাথে সাথে ৭ কার্টুন মাছ হরিলুট করা হয়। বাকী ৭ কার্টুন মাছ উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনা হয়। সেখানে মাছের মালিককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও মাছ ধ্বংস করা হয়।
অনুরুপভাবে ৮ জুলাই আবারও দুটি জেলি পুশ করা মাছে ট্রাক জব্দ করা হয়। এদিন ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ট্রাক দুটি ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা বলেন, মাছ আত্মসাতের কোন প্রশ্নই ওঠে না। আমার ছেলে অসুস্থ থাকার কারণে আমি পরে এসেছি।
এ বিষয়ে জানতে জেলা মৎস্য কর্তকর্মা ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, অভিযানের নেতৃত্ব দেয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এ অভিযানের সব কিছুই তার হাতে। আমার কর্মকর্তারা মাছ আত্মসাৎ করতে পারে না। তবে আমি এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেব। দোষী হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।