কল্যাণ রিপোর্ট
যশোরের শার্শায় কাছারি বাড়ির সরকারি জমি ৪১ বছর আগে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সদস্যরা। দুদক সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের একটি দল গতকাল সরেজমিনে তদন্ত করে জালিয়াতির বিষয়ে সত্যতা পেয়েছেন এবং শিগগিরই তারা প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।
ফজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি শার্শা মৌজার সাবেক ১২৫৫ দাগের ৩৫ শতক সরকারি জমি প্রথমে একসনা বন্দোবস্ত নেন। এর মধ্যে ৩২ দশমিক ৬৩ শতক (প্রায় এক বিঘা) জমি ১৯৮০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নিজ নামে রেকর্ড করে নেন। প্রথম দিকে বিষয়টি গোপন থাকলেও তার মৃত্যুর পর ছেলে কবির হোসেন, জসিম উদ্দিন, মনির হোসেন ও ইমাম হোসেন সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করায় বিজয়টি জানাজানি হয়ে যায়। সরকারি ওই জমি কীভাবে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড হলো তা নিয়ে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসনও। উপজেলা ভূমি অফিস থেকে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ করেন কালেক্টরেট যশোরের নামে কাছারি বাড়ির বাস্তু শ্রেণির জমি। কাছারিবাড়ির জমি ধানী হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ফজলুর রহমানের মারা যাওয়ার পর তার সন্তানদের নামে ওই জমি রেকর্ড করা হয়। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসককে অবহিত করে চিঠি লেখেন। এরপর যশোরের জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে এলএসটি মামলা করার জন্য সরকারের জিপিকে চিঠি দেয়া হয়।
যশোর আদালতের জিপি কাজী বাহাউদ্দীন ইকবাল জানান, জেলা প্রশাসনের চিঠি পেয়ে ২৩ সেপ্টম্বর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আদালতে ৮ জনের নামে মামলা করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন শার্শার মোড়লপাড়ার ফজলুর রহমানের ৫ সন্তান জসিম উদ্দিন, করিম হোসেন মনির হোসেন, ইমাম হোসেন, শাহিনা খাতুন, নুরুল ইসলামের স্ত্রী জাহানারা খাতুন, ফজলুর রহমানের স্ত্রী রেহেনা খাতুন ও মমতাজ বেগম। বিচারক আসামিদের প্রতি সমন জারি করে আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার দিন ধার্য করেন।
এরই মধ্যে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ পেয়ে দুদক যশোর কার্যালয় বুধবার ঘটনাস্থলে যায়।
তদন্ত দলের নেতৃত্বে থাকা দুদক সমন্বিত যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘অভিযোগের সতত্য পাওয়া গেছে। ওই জমি ফিরে পেতে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে মামলা করা হয়েছে। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ভূমি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। সরকারি জমি যাতে উদ্ধার হয় সে বিষয়ে তারাও তৎপর রয়েছেন।