নিজস্ব প্রতিবেদক: মালদ্বীপে ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশের টেবিল টেনিস খেলোয়াড়েরা। দক্ষিণ এশিয়ান জুনিয়র অ্যান্ড ক্যাডেট টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে বালক অনূর্ধ্ব-১৯ দলগত ইভেন্টে গতকালই সোনা জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশের সামনে প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। আগের দিন পাকিস্তান, মালদ্বীপ ও নেপালকে হারানোর পর আজ সোনা জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে ৩-২ গেমে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক ইভেন্টে সোনা জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
টেবিল টেনিসের এই বাংলাদেশ দলে খেলেছেন রামহিম লিয়ন বম, মুহতাসিন আহমেদ ও নাফিস ইকবাল। এর আগে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেবিল টেনিসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল রুপা জয়। সেটাও দক্ষিণ এশিয়ান জুনিয়র অ্যান্ড ক্যাডেট টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে। ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে সোনাম সুলতানা ও মৌমিতা আলম জুটি বালিকা দ্বৈতে রুপা জিতেছিলেন। এর প্রায় ১৯ বছর পর আরেকটি সাফল্য ধরা দিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের।
এই সোনার পদক আমাদের টেবিল টেনিসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি অনেক আনন্দিত। আমাদের এত দিনের পরিশ্রম সফল হয়েছে। বাংলাদেশ যে পদক জিততে পারে, সেই দৃষ্টান্ত দেখিয়ে দিলাম। অনুশীলনের যে বিকল্প নেই, সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। করোনার মধ্যেও আমরা নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে গেছি।
সোনা জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ উচ্ছ্বসিত জাতীয় দলের কোচ মোহাম্মদ আলী। মালদ্বীপ থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘এই সোনার পদক আমাদের টেবিল টেনিসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি অনেক আনন্দিত। আমাদের এত দিনের পরিশ্রম সফল হয়েছে। বাংলাদেশ যে পদক জিততে পারে, সেই দৃষ্টান্ত দেখিয়ে দিলাম। অনুশীলনের যে বিকল্প নেই, সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। করোনার মধ্যেও আমরা নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে গেছি।’
একটা টুর্নামেন্টে সোনা জিতে আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গেছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের। মোহাম্মদ আলীর কণ্ঠে সেই আত্মবিশ্বাসের সুর, ‘আগে যখন বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলতে যেতাম, সবাই মনে করত আমরা বেড়াতে যাচ্ছি। কিন্তু এখন আর সেভাবে কেউ ভাবে না। এখন সবাই সমীহ করে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের।’
পল্টনের শহীদ তাজউদ্দীন ইনডোর স্টেডিয়ামে সংস্কারকাজ চলায় টেবিল টেনিসের অনুশীলনেও বিঘœ ঘটেছে। কিন্তু অনুশীলন পুরোপুরি থামিয়ে রাখেনি বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দোতলার বারান্দায় মাত্র কয়েকটি টেবিল পেতে অনুশীলন করেছেন খেলোয়াড়েরা। এমনকি রোজার মধ্যেও অনুশীলন চালিয়ে গেছেন সবাই। সেই পরিশ্রম যে ব্যর্থ হয়নি, সেটাই বলছিলেন মোহাম্মদ আলী, ‘এই টুর্নামেন্টে ভালো করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা প্রায় দেড় বছর ধরে অনুশীলন করেছি। আমরা গত রোজার সময় ইফতারের পর বাসা থেকে রওনা দিয়ে পল্টনে পৌঁছে প্রায় সাহ্রি পর্যন্ত অনুশীলন করেছি। এক দিনও অনুশীলন বন্ধ রাখিনি। এমনকি এখানে এসে গভীর রাত পর্যন্ত অনুশীলন করেছি। সেই পরিশ্রমেরই ফল মিলেছে এবার।’