করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন নির্দেশনা কার্যকর হচ্ছে না গণপরিবহনসহ কোথাও। শুধু তাই নয় স্কুল শিক্ষার্থীদের যে টিকা দেয়া হচ্ছে সেখানকার অবস্থা আরো ভয়াবহ। নির্দেশনা দিয়েই শেষ, কিন্তু তদারকির কোন লক্ষণ নেই।
খোদ রাজধানী থেকে দেশের সব রুটে বাস ও মিনিবাসে একই অবস্থা। সিট অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের কথা থাকলেও তা মানছেন না পরিবহন চালকরা। এছাড়া যাত্রী, চালক ও হেলপারের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক থাকলেও অনেককেই তা মানতে দেখা যায়নি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকায় মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর হতে যাচ্ছে সরকার। ১৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন। দু-এক দিন পর্যবেক্ষণ করার পরে সরকার অ্যাকশনে যাব। কারণ প্রথম থেকেই অ্যাকশনে যেতে চায় না।
করোনা সংক্রমণের যে ঊর্দ্ধগতি তাতে সতর্কতা অবলম্বন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। দুর্যোগ ঠেকানো যাবে না। কিন্তু দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবার চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে। আর এই ঠেকানোর কৌশলের সব কিছু আছে ১১ দফা নির্দেশনার মধ্যে। কিন্তু দেশের কোথাও এই ১১ দফা মানা হচ্ছে না। মানানোর ব্যাপারে যাদের দায়িত্ব তারাও যেন গায় পানি ঢেলে বসে আছেন। নতুবা শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বেলায় কেন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হবে। করোনার বিগত দিনগুলোতে দেখা গেছে সতর্কতা অবলম্বনে সরকারি বিভিন্ন মহলের তৎপরতা। এবার তার উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে যেন। প্রশ্ন আসতে পারে মানুষ তার স্বার্থে স্বেচ্ছায় বিধিবিধান মানছে না কেন।
কিন্তু বাস্তব কথা হলো যত বড় স্বার্থের কথা হোক না কেন দেশের জনগণকে তা আইন দিয়ে, ক্ষমতা দিয়ে মানাতে হয়। যুগে যুগে কালে কালে সব দেশে তাই ঘটে। যে দেশের মানুষকে যত সুশৃঙ্খল মনে হয় সে দেশের আইনের প্রয়োগ ততটা বেশি। আইন মানার চর্চা করতে করতে মানুষ তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে সে ভাবে আইনের প্রয়োগ নেই। আর তাই চর্চাও নেই। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই দায়ী। তারা সরকারি দায়িত্ব নিয়ে চেয়ারে বসে সরকারি সুযোগ সুবিধা নেন ঠিকই, কিন্তু দায়িত¦ নিলে যে তা পালন করতে হয় সে কালচারটা উঠে গেছে।
করোনা বিধিবিধান না মানলে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। ক্ষতি হয়ে গেলে তখন কানে পানি ঢুকিয়ে লাভ হবে না।