গগণ গোসাই: রাত হলে হৈবতপুরে ঢুকছে কালো ও সাদা রঙের দুটি মাইক্রোবাস। বেপরোয়া গতিতে গ্রামের রাস্তায় চলাচল করছে। কোথাও যখন থামছে ভেতর থেকে বের হচ্ছে সশস্ত্র কিছু অচেনা মুখ। ফলে রাতবেরাতে সশস্ত্রদের আনাগোনায় জনপদটি জুড়ে ভীতি ছড়িয়েছে। ভোট ঘিরে কারোর জীবননাশের উদ্দেশেই তাদের এমন গতিবিধি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে সাতমাইল বাজারে সাদা ও কালো রঙের মাইক্রো দুটি অবস্থান নেয়। গাড়ির দুটির গ্লাস আটকানো ছিল। রাত ৯টার দিকে বাজার ছেড়ে মোড় নেয় রহমতপুর গ্রামের দিকে। গ্রামের একটি মোড়ে পৌঁছে গাড়ি দুটি থেমে যায়।
থামার খানিক পর সাদা রঙের মাইক্রোটি থেকে বেরিয়ে আসে অচেনা কিছু মুখ। তাদের ৪ জনের হাতে ছিল রামদা। এমন দৃশ্য স্থানীয়দের কয়েকজনের চোখে পড়লে এটি মুঠোফোনে গ্রামবাসীকে সতর্ক করেন। খবর জানার পরপরই লাঠি-সোটা নিয়ে কয়েকশ’ মানুষ চারপাশ থেকে তাদের ঘিরে ফেলার চেষ্টা করেন। গ্রামবাসীর ধাওয়ার মুখের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি দুটি রহমতপুর গ্রাম ছেড়ে যায়। সেদিন ভীত-সন্ত্রস্ত গ্রামবাসী নির্ঘুম রাত পার করেন। তারপর থেকে স্থানীয়রা পালা করে লাঠি হাতে গ্রাম পাহাড়া দিচ্ছেন।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের দাবি, ইউপি নির্বাচন প্রভাবিত করতে মাঠে নেমেছে চিহিৃত সন্ত্রাসী ও মাদককারবারীরা। ইয়াবা ব্যবসায়ী এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এদের সাথে যুক্ত হয়েছে ১৫ জন স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারী। এদের সাথে যশোর শহরের কিছু দাগী চিহিৃত খুনি-সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারীও হৈবতপুরে অবস্থান করছে। এই চক্রটি তাদের পছন্দের প্রার্থীর শোচনীয় ভরাডুবির আশঙ্কায় নানাভাবে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। স্থানীয়দের ধারণ তারাই এই সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে।
শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হরেন কুমার বিশ্বাস জানান, তার গ্রামে দুটি মাইক্রোবাস ঢুকেছে। সাদা রঙের মাইক্রোবাসে থাকা ৪ জনকে রামদা নিয়ে নামতে দেখে গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল গাড়ি কিন্তু রামদা দেখে ধারণা বদলে যায়।
বিষয়টি জানা পর তাৎক্ষণিক যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকারের মুঠোফোনে কল করা হয়। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি। কিছুক্ষণ পর দৈনিক কল্যাণের ল্যান্ড ফোন থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সংযোগটি কেটে দেন।