বুষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে
ড্রেনের ময়লা রাখা হয় রাস্তায়
আসিফ অরণ্য: অবহেলা অযত্নে ২০ বছর পার হলেও যশোর শহরের রবীন্দ্রনাথ সড়ক সংলগ্ন নলডাঙ্গা রোডের দিকে নজর পড়েনি পৌর কর্তৃপক্ষের। অথচ ব্যবসায়ীক এলাকা হিসাবে খ্যাত এই অঞ্চলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন আসেন হাজার হাজার মানুষ। খুলনা বিভাগের সব থেকে বড় মোটর পার্টসের খুচরা ও পাইকারি বাজার হিসাবেও পরিচিত শহরের রবীন্দ্রনাথ সড়ক।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ ২০ বছর যাবত সংস্কার হয়নি এই সড়কের। এখানে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, পাঠাগারসহ, মোটর পার্টস ব্যবসার বড় বাজার রয়েছে। এছাড়াও সড়কের আশেপাশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন ২০০ থেকে ৩০০ পরিবার। যাদের কথা পৌরসভা কখনোই চিন্তা করেনি। বর্ষা মৌসুমে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী এবং স্কুলগামী শিশুরা। তারা বলছেন, সামান্য বৃষ্টি হলে হাঁটু পানিতে ডুবে যায় এই সড়ক।
মোটর পার্টস ব্যবসায়ী প্রতিক বাবু বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে মানুষ আসেন মোটরসাইকেলের পার্টস কেনার জন্য। রাস্তার বেহাল দশার কারণে অনেক সময় লজ্জার ভেতরে পড়তে হয়। অনেকে প্রশ্ন করেন শহরের এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গার এমন দশা কেন? তখন আসলে কোন উত্তর থাকে না। দীর্ঘদিন যাবত এমন অবহেলিত অবস্থার ভেতরেই ব্যবসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের।
ব্যবসায়ী রানা রহমান বলেন, একেতো সরু রাস্তা। তার ওপর খানাখন্দ ভরা। আবার ড্রেন পরিস্কার করার নামে ড্রেনের ময়লা এই রাস্তার ওপর ফেলে রাখে পৌরসভা। সেই কাদাপানি মাড়িয়ে চলাটা দায় হয়ে পড়ে। আর ড্রেনের ময়লা রাস্তার ওপরে পরে থাকে তিন থেকে চার দিন। এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলরকে বললেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহ নেওয়াজ রুশো বলেন, বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। হালকা বৃষ্টি হলে হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তা। নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার উপায় থাকে না। আমাদের এই দুর্ভোগ আদৌ কাটবে কিনা সংশয়ে আছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং উঠে খানাখন্দ হয়ে গেছে। যেখানে রাস্তায় চলাচল কষ্ট। যার কারণে প্রায় ঘটে দুর্ঘটনা। ইসলামিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ড্রেনের ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে। যার জন্য শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনায় পড়ছে। ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলে, ময়লার জন্য আমারা ঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারি না। বৃষ্টি হলে স্কুলে আসতে পারি না। ময়লা পানিতে স্কুলের পোশাক নষ্ট হয়ে যায়।
ইসলামিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জানান, বর্ষা মৌসুমে এই সড়কে হাঁটার অবস্থা থাকে না। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাছাড়া রাস্তা আর ড্রেনের ময়লা পানি স্কুলের মাঠে এসে জড়ো হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ করানো সম্ভব হয় না। এখন পৌর কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত সড়কটি সংস্কার করেন তাহলে এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের উপকার হবে।
এ বিষয়ে পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ইতোমধ্যে সংস্কার হয়েছে। আর নলডাঙ্গা রোডটি মূলত বাইলেন রোড। নতুন প্রকল্প অনুযায়ী শহরের সকল বাইলেন রোডের কাজ এ বছরের শেষের দিকে শুরু হবে।