যশোরে সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ ২৪ নভেম্বর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের
উন্নয়নকাজের কথা সমাবেশে
তুলে ধরবেন। এটি কারো সঙ্গে
পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আ.লীগ
যশোরে দলীয় সভাপতির সমাবেশের
বিষয়টি অবগত হয়েছি। আগামী সপ্তাহে
আমরা প্রস্তুতি সভায় বসব। সমাবেশ
সফল করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।শহিদুল ইসলাম মিলন
সভাপতি, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ
ঢাকা অফিস
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশব্যাপী জনসংযোগের কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দলের তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে এবং গণসম্পৃক্ততা বাড়াতে সরাসরি মাঠে নামছেন। নির্বাচনের আগে জেলা ও বিভাগীয় সমাবেশে সশরীরে উপস্থিত থেকে নির্বাচনী বার্তা দেবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এরমধ্যে এ মাসেই যশোরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ নভেম্বর। সর্বশেষ কার্যনিবাহী সভায় এই ইঙ্গিত দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানিয়েছেন, আগামী ২৪ নভেম্বর যশোর, ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ও আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে সশরীরে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পর্যায়ক্রমে এ ধরণের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, যশোরে দলীয় সভাপতির সমাবেশ হবে বলে আমরা অবগত হয়েছি। সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি ঢাকায় রয়েছেন সংসদ অধিবেশন চলার কারণে। আগামী সপ্তাহে আমরা প্রস্তুতি সভায় বসব। সমাবেশ যাতে বিশাল হয় তার যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে যেসব জেলায় দীর্ঘদিন তিনি সফর করতে পারেননি; সেসব জেলা প্রাধান্য দেওয়া হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ বার্তা দেবেন তিনি। দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও পদবঞ্চিত কর্মীদের করা হবে উজ্জীবিত। কোন জেলায় দলের কী অবস্থা, তা আমলে নিয়ে দেবেন বিশেষ বার্তা।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, সভাপতির এ ধরনের সফরে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ভোটারদের সঙ্গে দলের ঘনিষ্ঠ সেতুবন্ধ তৈরি হবে বলে মনে করছেন উচ্চপর্যায়ের নেতারা। তার এই সম্ভাব্য সফর ঘিরে ইতোমধ্যে দলের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেসব জেলায় যাওয়া হয়নি, সেসব জেলায় আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাব। তবে যেসব জেলায় সম্মেলন হয়েছে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেখানে যাব না।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন ‘করোনার কারণে দলের সভাপতি দীর্ঘদিন রাজধানীর বাইরে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেননি। তিনি (শেখ হাসিনা) বেশ কিছুদিন ধরে বলছিলেন বাইরে জনসভা করবেন। প্রথমে দু-তিনটি জেলা নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে, এগুলোতে সমাবেশ করবেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায়ও করবেন। আর গণভবনে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে জেলার নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী যেসব জেলা বা মহানগরে সমাবেশ করবেন তার আশপাশে সড়ক-মহাসড়কে বা গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পোস্টার-ব্যানার-বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। এসব ব্যানারে স্থান পাবে বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি। চালানো হবে জনসমর্থন লাভের জন্য প্রচারণা।
দলের নেতারা বলছেন, দলীয় সভানেত্রী জেলা ও মহানগর পর্যায়ের সামনের সারির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দল এবং স্থানীয় পারিপাশির্^ক বিষয়ে জানতে চাইবেন। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেন্দ্র করে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিদ্রোহী হয়েছেন যারা তাদের কারা মদদ দিয়েছেন, কাদের কারণে দলের মনোনীত প্রার্থী হেরেছেন; সেসব বিষয়ে কথা বলতে পারেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধীদের অবস্থা সম্পর্কে সরাসরি ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং নির্বাচন সামনে রেখে দলের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন। দলীয় নেতাদের বিষয়েও কথা বলতে পারেন তিনি। কারণ প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে দলের নেতাদের বিষয়ে জরিপ চালাচ্ছেন। এই জরিপের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করা হতে পারে বলে ঘোষণাও দিয়েছেন।
এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ তিন বছর জেলায় জনসমাবেশ করতে পারেননি। নির্বাচনের আগে তিনি জেলায় যাবেন। এর মাধ্যমে তিনি জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করবেন এবং নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের ফিরিস্তি ও সরকারের উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরবেন। এগুলো কারো সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়। এসবের মূল লক্ষ্য জনগণের সমর্থন আদায়।
নাছিম বলেন, জেলার নেতাদের সঙ্গে বসলেও গুরুত্ব পাবে জাতীয় নির্বাচনী বিষয়। জেলা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি নির্বাচনের করণীয় বার্তা দেবেন।