নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের বেসরকারি পঙ্গু হাসপাতাল মালিক ডাক্তার আবদুর রউফকে নিয়ে ফেসবুকে ঝড় তুলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অনেকে তাকে কসাই ও চিকিৎসক নামে কলঙ্ক বলে মন্তব্য করেছেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাস ও কমেন্টেসে লেখা হয়েছে, পঙ্গু হাসপাতালে রোগীকে জিম্মি করে স্বজনদের গলা কাটা হয়ে থাকে। চিকিৎসা বাবদ মোটা অংকের বিল ধরিয়ে দেয়া হয় স্বজনদের হাতে। যার প্রতিবাদ করায় খুন হতে হয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মফিজুর রহমানকে।
শহরের মুজিব সড়কের রেলগেট এলাকার পঙ্গু হাসপাতালে আসা রোগীদের জিম্মি করে লম্বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জরুরি অপারেশনের কথা বলা হয়। রোগীদের ভয় দেখিয়ে বলা হয় জরুরিভাবে অপারেশন না করলে পঙ্গু হয়ে যাবে। অনেক সময় চুক্তি ছাড়াই রোগীকে অপারেশন করা হয়। এরপরে বিল হাকানো হয় সাধারণ অন্য হাসপাতালের চেয়ে আট-দশ গুণ পর্যন্ত বেশি টাকা। ওই হাসপাতলের মালিক ডাক্তার আবদুর রউফকে কসাই বলে অভিহিত করেছেন অনেকে।
ফেসবুকে নিজের আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক সাজেদ রহমান বকুল। তিনি বলেছেন, যশোরবাসীর কোন উপকারে আসনে না ডাক্তার রউফ। চিকিৎসক হিসেবেও তিনি যোগ্য নন। তার প্রতিষ্ঠান পঙ্গু হাসপাতালে রোগীদের অপচিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। আর রোগীদের আর্থিকভাবে পঙ্গু করা হয়ে থাকে। তার স্ট্যাটাসে শত শত মানুষ নানা মন্তব্য করে ঝড় তুলেছেন।
সাংবাদিক হাসিবুর রেজা কল্লোল মন্তব্যে লিখেছেন, এই ধান্দাবাজ এবং চিকিৎসক নামধারী দুর্বৃত্তকে যারা প্রশ্রয় দেয় তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতারক চিকিৎসার নামে অর্থ বাণিজ্য এবং সাধারণ মানুষকে হত্যা এবং নিঃস্ব করে চলেছে।
খন্দকার আলম নামে একজন লিখেছেন, ‘এই তো সেদিনের কথা ডা. রউফ নিজে কচুয়ায় বাড়ি ছেলেটার বয়স ১৬ থেকে ১৭ হবে। ছেলেটা নসিমনের সাথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পায়ে আঘাত লেগে পা ভেঙ্গে যায়। ছেলেটাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অনেক তালবাজি করে। ছেলেটা মারা যায়। কখনো কি পায়ে অপারেশন করতে গিয়ে রোগী মারা যায় আমার জানা নেই। অথচ ডা. রউফের হাতে ছেলেটা মারা গেলে মৃত্যুর পরও ছেলেটা নিয়ে তালবাহানা করলো। বলে লাইফ সাপোর্টে আছে। নিজের অপরাধ ঢাকতে তিন দিন পর মৃত্যুর কথা জানায়। ছেলের পরিবার অনেক গরীব অসহায়। এজন্য বিচার হলো না। ডা. রউফের বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম মেম্বার আনোয়ার হোসেন লিখেছেন, ‘আমি নিজেও ভুক্তভোগী। একদিন আমার বোনকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে চারমভাবে বিপদের সম্মুখীন হয়েছিলাম। ফোন করলেই একজন মহিলা ফোন ধরে বলেন স্যার ফোনে কথা বলেন না। যা হোক তারপর আমি পরিচয় দিলাম। বললেন ও আচ্ছা চিনতে পারছি, বলেন কি করতে হবে। বোনের চিকিৎসা বিষয়ে কথা বললাম তারপরও একই অবস্থা এবং বোনকে বলেছেন তদবিরে কোন কাজ হবে না। এখনকার নিয়মে সব চলে। যা হোক ভদ্রলোক একটা বেয়াদব এতে কোন সন্দেহ নেই।
যশোর জেলা পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম মিলন লিখেছেন, ‘…পঙ্গু হাসপাতালে গেলে তাকে অর্থনৈতিক পঙ্গু করে দেবে।’
মনিরুজ্জামান টিটো লিখেছেন, পায়ের হাড় চটা নিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে বারো ঘণ্টার মধ্যে লাশ হয়ে ফিরেছিলো তরতাজা যুবক মেহেদি (২৭)। বিচার পায়নি মেহেদির পরিবার। সেদিন টাকার জোরে প্রশাসনকে পক্ষে নিয়েছিল কসাই রউফ।
আরো পড়ুন:
পাল্টে যাচ্ছে ময়না তদন্ত রিপোর্ট!
ডা. রউফ-সন্ত্রাসী মধুর সম্পর্ক !
যশোরে নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর কালীগঞ্জের একজনের লাশ উদ্ধার